প্রাককথন

চিকিৎসা বিজ্ঞানের হাজার বছরের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে বাংলাদেশে।

 

দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশী একজন গবেষক ইমিউনোলজি বিজ্ঞানের সঙ্গে হোমিওপ্যাথির সমন্বয় ঘটিয়ে এই অসম্ভব কাজটিকে সম্ভব করতে সক্ষম হয়েছেন। যার দ্বারা তিনি প্রায় সকল প্রকার আরোগ্য অসম্ভব রোগকে আরোগ্য করতে সফল হয়েছেন। বাংলাদেশে উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তি একদিন সমগ্র বিশ্বের স্বাস্থ্য সেবায় নতুন এক মাত্রার সংযোজন করবে যার দ্বারা মানুষ থাকবে আজীবন রোগমুক্ত। ১৯৪২ সালে বিজ্ঞানী জুলস টি ফ্রয়েন্ড নামে আমেরিকার একজন অণুজীব বিজ্ঞানী কিছু প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদানের সঙ্গে জীবাণুর মৃত দেহকে মিশিয়ে জন্তুর দেহে ইনজেকশনের দ্বারা প্রয়োগ করে ক্যান্সারজনিত টিউমার আরোগ্য করেন। তার এই গবেষণা লব্ধ প্রক্রিয়া মানুষের বেলায় ইনজেকশনের দ্বারা প্রয়োগ করার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারণ মানব দেহে ঐসকল বিজাতীয় পদার্থকে ইনজেকশনের দ্বারা প্রয়োগ করলে মাংশপেশীতে পচন ধরে যায়। দীর্ঘ ২০ বছর গবেষণার পর বিজ্ঞানী ফ্রয়েন্ডের  পদ্ধতিটি মানবদেহে প্রয়োগের অযোগ্য বলে পরিত্যক্ত হয়। এরপর চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে উজ্জীবিত করার জন্য সাইটোকাইন নামক উপাদান নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। সফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছার পর কিছু জটিলতার কারণে যা সম্পূর্ণ সাফল্য লাভ করতে ব্যর্থ হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই ব্যর্থতা ক্যান্সারসহ জটিল সব রোগের চিকিৎসায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের  অগ্রগতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে। বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের গৃহীত পদ্ধতি কোন রোগকেই নির্মূল করতে সক্ষম হচ্ছে না। বরং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে দূর্বল করে রেখে রোগের তীব্রতাকে ক্রমাগত বাড়িয়েই চলেছে যা মানুষকে অবধারিত মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই প্রতিবন্ধকতাকে লক্ষ্য করেন বাংলাদেশী একজন গবেষক। তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ ইমিউনোলজি বা রোগপ্রতিরোধ বিদ্যার অগ্রগতির উপর পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছিলেন। ফ্রান্সের গবেষক ডাঃ ও,এ, জুলিয়ানের পদাঙ্ক অণুসরনকারী এই গবেষক মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞানী ডাঃ অব্রে ডি গ্রে কর্তৃক পরিচালিত এ্যান্টি এ্যাজিং নিয়ে গবেষণার একজন একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন। বিজ্ঞানী ফ্রয়েন্ডের আবিষ্কারকে অবলম্বন করে উক্ত বাংলাদেশী গবেষক মানুষের দেহে উপরোক্ত উপাদানগুলোকে প্রয়োগ করার পথ খুঁজতে থাকেন। তিনি লক্ষ্য করেন যে, আয়ুর্বেদ, ইউনানী ও হোমিওপ্যাথিতে ঐসকল বিজাতীয় পদার্থগুলোকে ইনজেকশনের পরিবর্তে যুগ যুগ ধরে মুখে খাইয়ে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে যার দ্বারা বিভিন্ন রোগকে আরোগ্য করা সম্ভব হয়েছে, অথচ এর ফলে ইনজেকশনের মতো কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় নি। কিন্তু উপরোক্ত তিনটি শাস্ত্রের উদ্ভাবক গবেষকগণ বিষে বিষ নাশ, বায়ু পিত্ত কফের মতবাদ এবং সমবিধানের মতবাদ দ্বারা আরোগ্য প্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করেছেন। আমাদের গবেষক ইমিউনোলজি বা রোগপ্রতিরোধ বিদ্যার আলোকে এই তিন মতবাদকে বিশ্লেষণ করে দেখতে পেলেন যে, বিজ্ঞানী ফ্রয়েন্ডের পদ্ধতির সঙ্গে এই তিনটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির একটি গভীর সম্বন্ধ বিরাজ করছে। মানব দেহের ভিতর বিদ্যমান নয় এমন যে কোন উপাদানকে যদি মানবদেহে প্রবিষ্ট করানো হয় তাহলে দেহের শ্বেতকণিকা নামক  অতি সূ² রক্ষী বাহিনী উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং দেহে প্রবিষ্ট বিজাতীয় পদার্থসমুহকে ধ্বংস করতে শুরু করে। এই কাজটি করার সময় তারা দেহের ভিতর বিদ্যমান মাতৃগর্ভে থাকার সময় জন্মের পূর্বেই অথবা জন্মের পরে যেসকল জীবাণু প্রবেশ করে ইমিউন টলারেন্স নামক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার অকার্যকর অবস্থার সুযোগে মানুষের দেহে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিল এবং নানাবিধ রোগের সৃষ্টি করছিল, তাদেরকেও ধ্বংস করে ফেলে। এভাবে যদি বিজ্ঞানী ফ্রয়েন্ডের আবিষ্কার দ্বারা আমরা প্রাচীনপন্থী প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোকে ব্যাখ্যা করতে পারি তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের সংশয় দূর হয়ে যেতে পারে। কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা নানাবিধ প্রাকৃতিক বিষাক্ত উপাদান দ্বারা রোগ চিকিৎসাকে যুক্তি সংগত বলে মেনে নিতে পারছেন না। প্রসংগতঃ উল্লেখ্য যে, পোলিও টিকাকে ইনজেকশনের দ্বারা প্রয়োগ করার ফলে যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে অগনিত শিশু পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে বিকলাঙ্গ হয়ে গিয়েছিল, মুখে খাইয়ে প্রয়োগ করার ফলে সেই পার্শ¦প্রতিক্রিয়া থেকে আজ মানুষকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যেমনটি সম্ভব হয়েছে ডায়ারিয়া রোগের ক্ষেত্রে ইনজেশনের পরিবর্তে মুখে খাইয়ে ওরস্যালাইনের ব্যবহারকে  প্রবর্তন করে। দেহের যেকোন জটিল রোগের কারণ হিসাবে কোন না কোন ভাইরাস এবং সেই ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট এ্যান্টিজেন নামক বিষকেই দায়ী করা হয়ে থাকে। ভাইরাস নাশক ঔষধ দ্বারা ভাইরাসকে ধ্বংস করা সম্ভব হলেও প্রাণহীন এ্যান্টিজেন নামক বিষকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। নানাবিধ রোগ সৃষ্টিকারী ঐসকল এ্যান্টিজেন নামক বিষসমুহকে একমাত্র টি এবং বি সেল নামক শ্বেতকণিকাই ধ্বংস করতে পারে। যার জন্য প্রয়োজন ঐসকল বিষের অনুরূপ চরিত্র বিশিষ্ট প্রাকৃতিক উপাদানকে খুঁজে বের করা। এই কাজে আমরা হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে সুস্থ দেহধারী ব্যক্তিদেরকে মুখে খাইয়ে পরীক্ষা করে যেসকল সৃষ্ট রোগ লক্ষণ পাওয়া গিয়েছে সেগুলোর ভিত্তিতে বিচার করে সমলক্ষণ বিশিষ্ট প্রাকৃতিক উপাদানকে বেছে নিতে পারি। অতঃপর সেগুলোকে সূ²মাত্রায় মুখে খাইয়ে প্রয়োগ করলে দেহের টি এবং বি সেলসমুহ উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং মুখে খাওয়ানো উপাদানগুলোকে ধ্বংস করতে গিয়ে অনুরূপ চরিত্র বিশিষ্ট ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট এ্যান্টিজেন নামক বিষকে ধ্বংস করে রোগকে নির্মূল করে থাকে। ইমিউনোলজি বিজ্ঞানের আলোকে হোমিওপ্যাথি বিজ্ঞানের এই ব্যাখ্যার সাহায্যে বাংলাদেশী এই গবেষক জটিল যে কোন রোগকে আরোগ্য করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রচলিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই রোগীর দেহের মজ্জাগত, কোষগত এবং রসগত ক্ষেত্রে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আরোগ্যের প্রক্রিয়াকে উন্নততরভাবে ক্রিয়াশীল করতে সক্ষম এই নব উদ্ভাবিত প্রক্রিয়া চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। শুধুমাত্র রোগলক্ষণকে দূরীভূত করে নয় বরং আভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে রোগবিষ বা এ্যান্টিজেনের পুঞ্জিভূত আধারকে ধ্বংস সাধন করার ফলে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, য²া ইত্যাদি সব রোগের মূল উৎপাটন করা সম্ভব হয়েছে।  এই চিকিৎসার দ্বারা দেহকে বিষমুক্ত করার ফলে মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে সন্তান জন্মদানে সক্ষম পিতামাতাকে চিকিৎসার আওতায় এনে তাদের দেহকে বিষমুক্ত করে ভাবী সন্তানদেরকে স্বাস্থ্যবান এবং রোগপ্রবণতা মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। এমনকি এইচ,এল,এ,বি,২৭ এর প্রভাবে সৃষ্ট রোগ এ্যাংকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস অথবা কনজেনিটাল মেগাকোলন, শোগ্রেন্স সিনড্রম, এস,এল,ই ’র মতো জটিল সব রোগের আরোগ্য সম্ভব হচ্ছে ।

হোমিওপ্যাথিক ইমিউনোমডুলেশন : হ্যামিলনের বাঁশির মিষ্টি সুরেলা আওয়াজ, যা নির্মূল করবে মানবজাতির ধবংসাত্মক রোগের প্রক্রিয়াকে

মানবজাতিকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। দিনদিন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হারাচ্ছে মানুষ। নিঃশব্দ পায়ে রোগের অপশক্তিরা দখল করে নিচ্ছে মানুষের সুন্দর দেহগুলিকে। হাহাকার করছে মানুষের অস্থির মাঝে আবৃত মজ্জার জীবনীশক্তি। ইমিউনোসাপ্রেশন বা অবদমনের কঠোর হাতে দমন করা হচ্ছে তাদের আর্তনাদ। রোগশক্তির হাত থেকে মুক্তির জন্য জ্বর, ব্যথা ইত্যাদি দেহের সকল প্রয়াসকে রোগ নামে আখ্যায়িত করে তাদেরকে শক্তহাতে দমন করা হচ্ছে। ফলে বিনা বাধায় রোগশক্তি প্রবেশ করছে দেহের গভীরে। তাদেরকে ধবংস করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে অধিকতর শক্তিশালী ভাইরাস বিনাশী সব ওষুধ যা মানবদেহের প্রতিরোধ শক্তি আরো অকেজো করে ফেলছে। মানুষ রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে খামারে পালিত পশুর মত ওষুধ নির্ভর অস্থিমজ্জার শক্তিবিহীন মেদবহুল সব প্রাণীতে। আক্রান্ত হচ্ছে অজ্ঞাতপরিচয় সব ভাইরাস দ্বারা। রোগপ্রতিরোধ শক্তির প্রধান উত্স সূর্যরশ্মি থেকে দুরে সরে গেছে মানুষ, হয়ে পড়ছে নির্জীব, নিবীর্য্য। পরিণত হচ্ছে বিশালদেহী অস্থিবিহীন থলথলে মাংসপিন্ডে। আবিষ্কার হচ্ছে টিকা, কিন্তু টিকা থেকে প্রাপ্ত প্রশিক্ষণকে কাজে লাগানোর জন্য নেই কোন যোগ্য সৈন্যবাহিনী যার নাম শ্বেতকণিকা। এখন প্রয়োজন মজ্জার শক্তিবৃদ্ধিকরণ বা বোনম্যরো স্টিমুলেশন। যার জন্য চাই অতি সূক্ষ্ম শক্তির ওষুধ, যারা ভেদ করতে পারবে অস্থির বাধা, প্রবেশ করবে মজ্জাতে, যে কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছে সাইটোকাইন। শরীরকে উদ্দীপ্ত করতে হবে, যখন শরীর নিজেই তৈরী করবে প্রয়োজন মতো সঠিক মাত্রার সাইটোকাইনটিকে, বাইরে থেকে ইচ্ছামতো সরবরাহ করে যে কাজটি করা যাচ্ছেনা। দেহের প্রতিরোধ শক্তি উজ্জীবিত হয়ে শত্রুকে ধবংস করবে যখন, তখন শুরু হবে রোগ জীবাণুর মৃত দেহের দ্বারা সৃষ্ট বর্জ্য নিঃসরন। কফ , কাশি, ঘর্ম, চর্মরোগ, মলমূত্র ইত্যাদি নিঃসরণ প্রক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত বর্জ্য নিঃসরণের কাজগুলোকে আর বাধাগ্রস্ত করা চলবে না। সেবন করতে হবে এমন সব ওষুধ যা একাধারে করে থাকে উজ্জীবিতকরণ এবং বর্জ্য নিঃসরনের কাজ। একটু সময় লাগবে এই প্রক্রিয়াটি সম্পাদিত হতে। মূল শত্রুকে চিনতে হবে । রোগনিরাময় প্রক্রিয়াকে রোগ ভাবলে চলবেনা, যে ভুলের বশবর্তী হয়ে আমরা দেহের ভাষা না বুঝে আজ দেহকে করছি লাঞ্চিত। ফলে শাস্তি ভোগ করছি আমরা। স্বাস্থ্য রক্ষা করা কোন মধুর খেলা নয়। রোগশক্তিকে নিধন করতে হলে একটু কষ্ট স্বীকার করতে হবে বইকি। শত্রুর আক্রমণের অপেক্ষায় বসে থাকলে চলবে না। আগে থেকেই দেহকে প্রস্তুত করে রাখতে হবে। আপাতদৃষ্টিতে নীরোগ বলে প্রতীয়মান শিশুকাল থেকেই মজ্জার শক্তি বাড়াতে হবে। প্রতিটি রোগলক্ষণের পিছনে দায়ী লুকানো এইচ, এল, এ নামক সুপ্ত রোগপ্রবনতাকে নিষ্ক্রীয় করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সন্তান জন্মদানে সক্ষম পিতামাতাকে বংশগতভাবে প্রাপ্ত রোগ থেকে মুক্ত করে রাখতে হবে যাতে আগামি দিনের বংশধর হবে রোগপ্রবনতা মুক্ত । শুধুমাত্র এমনি একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পিত প্রচেষ্টাই পারবে একটি প্রকৃত রোগমুক্ত মানবজাতিকে সৃষ্টি করতে। অন্যথায় চিকিত্সা বিজ্ঞান যে তিমিরে সেই তিমিরেই ঘুরপাক খেতে থাকবে।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান